সোমবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
জাপানকে অবিলম্বে ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের তেজস্ক্রিয় বর্জ্যপানি সাগরে নির্গমন বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে উত্তর কোরিয়া। পাশাপাশি এ ঘটনাকে মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে কিম জং উনের দেশ এবং এ জন্য জাপানকে জবাবদিহির দাবি জানিয়েছে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাপানি পদক্ষেপ (তেজস্ক্রিয় পানি প্রশান্ত মহাসাগরে নিঃসরণ) মানব জীবনের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যতকে মারাত্মকভাবে হুমকিতে ফেলেছে।
উত্তর কোরিয়া এমন সময় এই বিবৃতি দিল, যখন এরই মধ্যে ফুকুশিমার ১০ হাজার মেট্রিকটন তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে ফেলা শুরু করেছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা এক বিবৃতিতে এমনটাই জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ নিরাপদ।
জাপান বলেছে, ট্রিটিয়াম ছাড়া সব তেজস্ক্রিয় উপাদান এই পানি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তবে ট্রিটিয়াম পানি থেকে অপসারণ কঠিন। তবে পানির নির্গমন নিরাপদ এবং আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থাও (আইএইএ) বিষয়টি সমর্থন করেছে।
গেল জুলাইয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইএইএ জানিয়েছে, এই তেজস্ক্রিয় পানির নির্গমন নিরাপদ। পরিকল্পনাটি আন্তর্জাতিক মান পূরণ করেছে এবং মানুষ ও পরিবেশের ওপর এর প্রভাব খুবই নগণ্য।
জাপান সরকার কর্তৃক দুই বছর আগে অনুমোদিত এ পরিকল্পনাটিকে ২০১১-এর মার্চে সুনামিতে বিধ্বস্ত এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিলুপ্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মীরাও এ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন, যদিও সিউল তার নিজস্ব গবেষণা থেকে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে পানির মুক্তি আন্তর্জাতিক মান পূরণ করেছে।
তেজস্ক্রিয় পদার্থ অপসারণের জন্য পানিকে ফিল্টার করা হয়েছে। যদিও ট্রিটিয়ামের কিছু চিহ্ন অবশিষ্ট রয়েছে। ট্রিটিয়াম হলো হাইড্রোজেনের একটি আইসোটোপ যা পানি থেকে আলাদা করা কঠিন। তবে টেপকোর মতে, এর মাত্রা আন্তর্জাতিকভাবে অনুমোদিত মাত্রার নিচেই।
তবে এনভায়রনমেন্টাল প্রেশার গ্রুপ গ্রিনপিস বলেছে, পরিস্রাবণ প্রক্রিয়াটি ত্রুটিপূর্ণ এবং আগামী কয়েক দশকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে তেজস্ক্রিয় পদার্থ সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়বে।
চীনও জাপানের এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দেশটি এরই মধ্যে জাপান থেকে সি ফুড আমদানী বন্ধ করে দিয়েছে। বেইজিং দাবি করেছে, তেজস্ক্রিয় পানি সাগরে অপসারন যে নিরাপদ তা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে টোকিও। পাশাপাশি এ ঘটনায় প্রতিবেশী দেশ হিসেবেও চীনের উদ্বেগের তোয়াক্কাই করেনি তারা, আলোচনা করেনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গেও। এমন আচরণকে স্বার্থবাদী ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ হিসেবেই মনে করে বেইজিং।
ভয়েস/জেইউ।